‘বঙ্গদর্শন’ প্রত্রিকার পরিচয়:
‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকার প্রকাশ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা। এই পত্রিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে বাংলা সাময়িকপত্রের জগতে এক নতুন ধারার সূত্রপাত হয়। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে (১২৭৯ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় মাসিক ‘বঙ্গদর্শন’। এই পত্রিকা প্রকাশের পিছনে বঙ্কিমের উদ্দেশ্য ছিল সমকালীন শিক্ষিত মননের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সংযােগ ঘটানাে। বঙ্কিমচন্দ্রের কয়েকটি উপন্যাস এবং ‘লােকরহস্য’, ‘বিজ্ঞানরহস্য’, কমলাকান্তের দপ্তর’ প্রভৃতি গ্রন্থ বঙ্গদর্শন’-এর বিভিন্ন সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল।
বঙ্গদর্শন পত্রিকার নিয়মিত লেখকদের মধ্যে ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র স্বয়ং, সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শ্রীশচন্দ্র মজুমদার, বীরেশ্বর পাঁড়ে প্রমুখ। চতুর্থ পর্যায়ে ১৯০২-১৯০৭ (১৩০৯- ১৩১২ বঙ্গাব্দ)-এই চার বছর রবীন্দ্রনাথও নবপর্যায় বঙ্গদর্শন সম্পাদনা করেন।
‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকার গুরুত্ব :
সমাজ ও জীবন সম্পর্কে মানুষের প্রাচীন দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন নিয়ে আসা।
• সাহিত্য সমালােচনার উপযুক্ত ভাষা ও আদর্শ সৃষ্টি করা।
•পাশ্চাত্য দর্শন ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে দেশবাসীকে পরিচিত করিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে সমকালীনতা আনা।
•কেবল সৃজনশীল রচনা প্রকাশই নয়, ইতিহাস-দর্শন- অর্থনীতি-সমাজনীতি সম্পর্কিত বিবিধ আলােচনা ও জ্যোতির্বিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান ও প্রাণীবিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন রচনা এই পত্রিকায় প্রকাশিত হত।
•দেশের কৃষক সমাজের দুরবস্থার কথা এই পত্রিকাতে অত্যন্ত যুক্তিনিষ্ঠভাবে উপস্থাপিত হওয়ায় পরােক্ষে বঙ্গদর্শন পত্রিকাটি বাংলাদেশের মানুষকে জাতীয়তাবােধে উদ্দীপিত করে তুলেছিল।
•এই পত্রিকাতেই বঙ্কিমচন্দ্র ব্যক্তিগত নিবন্ধ রচনার সূচনা করেছিলেন।
very essential notes