দুর্যোগের ধরন- প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট (Dermatologist Prakritik Manbus)

দুর্যোগের ধরন:

দুর্যোগকে বিস্তৃতভাবে দুটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা যায়: প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট। প্রতিটি বিভাগে বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট রয়েছে যা মানুষ, সম্পত্তি এবং পরিবেশের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করতে পারে।

প্রাকৃতিক বিপর্যয়:

প্রাকৃতিক দুর্যোগ হল ধ্বংসাত্মক ঘটনা যা পৃথিবীর প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ফলে ঘটে। কিছু সাধারণ ধরনের অন্তর্ভুক্ত:

1. ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয়:

ভূমিকম্প:

টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ার কারণে হঠাৎ ভূমি কাঁপানো।

আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত:

আগ্নেয়গিরি থেকে ম্যাগমা, ছাই এবং গ্যাসের বিস্ফোরক মুক্তি।

ভূমিধস:

মাটি, শিলা এবং ধ্বংসাবশেষের দ্রুত নিম্নগামী চলাচল।

2. জলবিদ্যুৎ বিপর্যয়:

বন্যা:

সাধারণত শুষ্ক জমির উপর জলের উপচে পড়া, প্রায়শই ভারী বৃষ্টিপাত, নদী ওভারফ্লো বা বাঁধ ব্যর্থতার কারণে ঘটে।

সুনামি:

পানির নিচের ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বা ভূমিধসের ফলে সৃষ্ট বড় সমুদ্রের ঢেউ।

3. আবহাওয়া সম্পর্কিত দুর্যোগ:

হারিকেন/টাইফুন/ঘূর্ণিঝড়:

প্রবল বাতাস, ভারী বৃষ্টি এবং ঝড়ের ঢেউ সহ শক্তিশালী গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়।

টর্নেডো:

ঝড় থেকে মাটি পর্যন্ত প্রসারিত বাতাসের একটি হিংস্রভাবে ঘূর্ণায়মান কলাম।

তুষারঝড়:

প্রবল বাতাস এবং কম দৃশ্যমানতা সহ তীব্র তুষারঝড়।

খরা:

অস্বাভাবিকভাবে কম বৃষ্টিপাতের দীর্ঘ সময় পানির ঘাটতি দেখা দেয়।

4. জলবায়ু সংক্রান্ত বিপর্যয়:

o তাপপ্রবাহ: অত্যন্ত গরম আবহাওয়ার দীর্ঘ সময়কাল।

o দাবানল: বন, তৃণভূমি, বা অন্যান্য গাছপালা এলাকায় অনিয়ন্ত্রিত আগুন, প্রায়ই শুষ্ক অবস্থার কারণে বেড়ে যায়।

5. জৈবিক বিপর্যয়:

o মহামারী/মহামারী: একটি বৃহৎ জনসংখ্যাকে প্রভাবিত করে সংক্রামক রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব।

o পোকামাকড়ের প্লেগ: পঙ্গপালের মতো পোকামাকড়ের ব্যাপক উপদ্রব, যা ফসল এবং গাছপালা ধ্বংস করতে পারে।

মানুষের তৈরি বিপর্যয়

মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, মানবসৃষ্ট দুর্যোগ নামেও পরিচিত, মানুষের ক্রিয়াকলাপের ফলে ঘটে এবং ইচ্ছাকৃত বা দুর্ঘটনাজনিত হতে পারে। কিছু সাধারণ ধরনের অন্তর্ভুক্ত:

1. প্রযুক্তিগত বিপর্যয়:

o শিল্প দুর্ঘটনা: কারখানা, গাছপালা বা শোধনাগারে বিস্ফোরণ, আগুন বা রাসায়নিক লিক।

o পারমাণবিক দুর্ঘটনা: পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয় পদার্থের ফুটো, যেমন চেরনোবিল এবং ফুকুশিমাতে দেখা গেছে।

o কাঠামোগত ব্যর্থতা: নকশার ত্রুটি, দুর্বল নির্মাণ বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের কারণে ভবন, সেতু, বাঁধ বা অন্যান্য অবকাঠামো ভেঙে পড়া।

2. পরিবেশ দূষণ:

o তেল ছড়ানো: পরিবেশে, বিশেষ করে মহাসাগরে অপরিশোধিত তেলের ফুটো মারাত্মক পরিবেশগত ক্ষতি করে।

o রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়া: বাতাস, পানি বা মাটিতে দুর্ঘটনাজনিত বিপজ্জনক পদার্থের নির্গত হওয়া।

3. পরিবহন দুর্ঘটনা:

o বিমান দুর্ঘটনা: বিমান বা হেলিকপ্টার জড়িত দুর্ঘটনা।

o সামুদ্রিক দুর্ঘটনা: জাহাজডুবি, সংঘর্ষ বা তেল ট্যাঙ্কারের স্পিলেজ।

o রেলওয়ে দুর্ঘটনা: ট্রেনের লাইনচ্যুত বা সংঘর্ষ।

o সড়ক দুর্ঘটনা: মহাসড়কে বড় যানবাহনের স্তূপ বা বিপজ্জনক পদার্থের ছিটা।

4. সামাজিক বিপর্যয়:

o সন্ত্রাস: সমাজে ভীতি ও ব্যাঘাত সৃষ্টির লক্ষ্যে সহিংসতা বা বিদ্রোহের কাজ।

o যুদ্ধ এবং সংঘাত: সশস্ত্র সংঘর্ষের ফলে ব্যাপক ধ্বংস ও প্রাণহানি ঘটে।

o নাগরিক অস্থিরতা: দাঙ্গা, বিক্ষোভ, বা অন্যান্য বৃহৎ আকারের জনগণের অশান্তি।

5. মানুষের ত্রুটি:

o ডেটা লঙ্ঘন/সাইবার আক্রমণ: সংবেদনশীল তথ্যে অননুমোদিত অ্যাক্সেস, প্রায়শই আর্থিক এবং সুনামগত ক্ষতি হয়।

o দুর্ঘটনাজনিত আগুন: দাহ্য পদার্থের অবহেলা বা অপব্যবহারের কারণে আগুন।

প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের ধরন এবং কারণগুলি বোঝা সমাজ এবং পরিবেশের উপর তাদের প্রভাব কমাতে কার্যকর প্রতিরোধ, প্রশমন, প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়া কৌশল বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

Share
error: Content is protected !!

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading