৭৩তম সংবিধান (সংশোধন) আইন, ১৯৯২: একটি নোট
ভারতের ৭৩তম সংবিধান সংশোধনী আইন, ১৯৯২ পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার পুনর্গঠন ও শক্তিশালীকরণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই আইনের মাধ্যমে তৃতীয় স্তরের স্থানীয় শাসন ব্যবস্থাকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এটি পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ প্রদান করে এবং স্থানীয় উন্নয়নে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।
প্রধান বিধানসমূহ
১. তিন–স্তরের পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থা
- গ্রাম, ব্লক, এবং জেলা স্তরে পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা।
- প্রতিটি রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠার বাধ্যতামূলক বিধান।
২. সংবিধানের নতুন অধ্যায়:
- অধ্যায় IX (নবম) এবং অনুচ্ছেদ ২৪৩ থেকে ২৪৩–ও পর্যন্ত সংযোজন।
৩. সরাসরি নির্বাচন:
- পঞ্চায়েতের সদস্যদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করার ব্যবস্থা।
- প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচন বাধ্যতামূলক।
৪. সংরক্ষণ নীতি:
- পঞ্চায়েতে তফসিলি জাতি (SC), তফসিলি জনজাতি (ST) এবং মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের বিধান।
- গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসনের অন্তত ১/৩ অংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত।
৫. অর্থ কমিশন:
- প্রতি পাঁচ বছর অন্তর রাজ্য অর্থ কমিশন গঠন করে পঞ্চায়েতগুলির জন্য আর্থিক বরাদ্দ সুপারিশ করা।
৬. পরিকল্পনা ও উন্নয়ন:
- জেলা পরিকল্পনা কমিটি গঠন, যা স্থানীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করবে।
৭. ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ:
- পঞ্চায়েতগুলিকে স্থানীয় প্রশাসন এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষমতা প্রদান।
- ১১তম তফসিলে ২৯টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেমন কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তা, পানীয় জল ইত্যাদি।
৮. নির্বাচন কমিশন:
- রাজ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান।
উপসংহার
৭৩তম সংবিধান সংশোধনী আইন, ১৯৯২, গ্রামীণ প্রশাসনে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটি পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ প্রদান করে, স্থানীয় উন্নয়নের জন্য জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে এবং বিকেন্দ্রীকরণের নীতি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।