‘স্ত্রীর পত্র’ গল্পের নায়িকা চরিত্রটি চিত্রিত করো।

‘স্ত্রীর পত্র’ গল্পের নায়িকা চরিত্র

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘স্ত্রীর পত্র’ গল্পের নায়িকা চরিত্রটি মৃণাল। মৃণাল একটি সশক্ত ও জটিল চরিত্র, যা গল্পের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ মানবিক সম্পর্কের গভীরতর দিক ও সমাজের মুখাবয়ব তুলে ধরেছেন।

মৃণাল চরিত্রের বৈশিষ্ট্য:

  1. স্বাধীনচেতা ও শক্তিশালী: মৃণাল একজন স্বাধীনচেতা নারী, যিনি তার জীবনকে স্বাভাবিক এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে কাটানোর চেষ্টা করেন। তার স্বামীর প্রতি তাঁর ধৈর্য ও সহনশীলতা শেষ পর্যন্ত শেষ হয়ে যায়, এবং তিনি তার অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করতে শুরু করেন।
  2. অসন্তুষ্টি ও প্রতিবাদ: মৃণাল তার বিবাহিত জীবনে দীর্ঘকাল ধরে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। তার স্বামী, আদর্শ নৈতিকতার ছোঁয়া থেকে দূরে, তাকে অযথা উপেক্ষা করে এবং তার মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। মৃণাল এই পরিস্থিতে একটি প্রতিবাদী ভূমিকা গ্রহণ করেন।
  3. ভালোবাসা ও আত্মমর্যাদা: মৃণাল নিজের আত্মমর্যাদা এবং ভালোবাসার অধিকারের প্রতি সচেতন। সে একটি চিঠি লেখার মাধ্যমে তার হতাশা এবং তার জীবনের অবিচারের প্রতিবাদ করে। এই চিঠির মাধ্যমে তার মধ্যে আত্মমর্যাদা এবং স্বার্থপরতার বিরুদ্ধে একটি চূড়ান্ত প্রতিবাদ প্রকাশিত হয়।
  4. মানসিক দ্বন্দ্ব ও সঙ্কট: মৃণাল তার ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং মানসিক সঙ্কটের সম্মুখীন হন। তার স্বামীকে নিয়ে তার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং সামাজিক অসন্তোষ তার চরিত্রের গভীরতা ও জটিলতা প্রকাশ করে।
  5. সামাজিক অবস্থা ও সংকট: মৃণালের চরিত্র সামাজিক অবস্থা ও তার মধ্যে থাকা সংকটের প্রতীক। তার জীবন এবং পরিস্থিতি একটি বৃহত্তর সামাজিক সমস্যার প্রতিনিধিত্ব করে, যা গল্পের মাধ্যমে সমালোচিত হয়েছে।

সংক্ষেপে, মৃণাল ‘স্ত্রীর পত্র’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র, যিনি একটি শক্তিশালী, স্বাধীন, এবং আত্মসম্মানশীল নারী হিসেবে চিত্রিত। তার জীবন এবং সংগ্রাম গল্পের নৈতিক ও সামাজিক বার্তা তুলে ধরে।

Share

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading