বিহারীলাল চক্রবর্তীকে বাংলা গীতিকবিতার ইতিহাসে ‘ভোরের পাখি’ বলার তাৎপর্য | আধুনিক বাঙলা কবিতায় বিহারীলাল চক্রবর্তীর বিশিষ্ট দানের বিচার করো।

অথবা,  বাংলা গীতিকবিতার ইতিহাসে বিহারীলাল চক্রবর্তীর ভূমিকা ও অবদান আলোচনা করো।

বিহারীলাল চক্রবর্তীকে বাংলা গীতিকবিতার ইতিহাসে ‘ভোরের পাখি’ বলার তাৎপর্য:

হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্রের কাব্যরসে বাঙলার পাঠক সমাজ যখন আবিষ্ট সেইকালে বাঙলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠতম লিরিক-কবি রবীন্দ্রনাথ প্রথম যৌবনের দিনগুলি অতিবাহিত করেছেন। নবীনচন্দ্রের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল, তৎকালের প্রখ্যাত কবি হেমচন্দ্রের কাব্যের সঙ্গে তিনি পরিচিত ছিলেন। কিন্তু তারা কেউ রবীন্দ্রনাথকে আকর্ষণ করতে পারেন নি। অন্তর্মুখী ভাবপ্রেরণায় যে কিশাের কবি রবীন্দ্রনাথ আপন অন্তরের মধ্যে প্রেম ও সৌন্দর্যের বিশ্বরচনার বেদনা বহন করে ফিরতেনতিনি ‘অবােধবন্ধু’ নামক একটি স্বল্প প্রচারিত পত্রিকায় গুরুপদে বরণের যোগ্য একজন কবির সন্ধান লাভ করলেন। সেই কবির নাম বিহারীলাল চক্রবর্তী। হেম- নবীনের তুলনায় তাঁর কবিখ্যাতি কিছুই ছিল না। নিতান্ত বন্ধুগােষ্ঠীর মধ্যেই তাঁর পরিচিতি সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু আধুনিক বাঙলা গীতিকবিতার যে বিশিষ্ট ঐশ্বর্য রবীন্দ্র-প্রতিভার দানে আমাদের সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে তার পূর্বসূচনা একমাত্র বিহারীলালের কাব্যেই দেখা যায়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর পূর্বগামী কবিদের মধ্যে একমাত্র বিহারীলালকেই অকুণ্ঠিত ভাষায় আপন কবিগুরু বলে উল্লেখ করেছেন।

সমসাময়িক বাংলা কাব্যের পরিবেশ বিহারীলালের অনন্যতা নির্দেশ করে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “বিহারীলাল তখনকার ইংরেজি ভাষায় নব্যশিক্ষিত কবিদের ন্যায় যুদ্ধবর্ণনাসংকুল মহাকাব্য, উদ্দীপনাপূর্ণ দেশানুরাগমূলক কবিতা লিখিলেন না এবং পুরাতন কবিদিগের ন্যায় পৌরাণিক উপাখ্যানের দিকেও গেলেন না—তিনি নিভৃতে বসিয়া নিজের ছন্দে নিজের মনের কথা বলিলেন। তাহার সেই স্বগত উক্তিতে বিশ্বহিত দেশহিত অথবা সভামনােরঞ্জনের কোনাে উদ্দেশ্য দেখা গেল না। এইজন্য তাহার সুর অন্তরঙ্গরূপে হৃদয়ে প্রবেশ করিয়া সহজেই পাঠকের বিশ্বাস আকর্ষণ করিয়া আনিত।” কবি-ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের অন্তর্লোক, তার সৌন্দর্য-চেতনায় নিজস্ব কল্পনার জগৎ একান্তভাবে লিরিক কবির কাব্য-বিষয়। বিহারীলালে একান্তভাবে একজন অনুপ্রাণিত কবির নিজস্ব ভাবনা-বেদনার স্বগত ভাষণ শােনা গেল। বাঙলা কাব্যে সেই প্রথম একজন কবির নিজস্ব সুর রণিত হয়ে উঠল। বিহারীলালের কাব্যে ভাষা ও ছন্দশাস্ত্রের যান্ত্রিক নিয়ম অস্বীকার করে সূক্ষ্ম ও গভীর অনুভূতি ব্যঞ্জনায় শক্তি-সমন্বিত হয়ে উঠেছে। মধুসূদনের পরে বিহারীলালই বাঙলা কবিতায় ভাষা এবং ছন্দপ্রয়ােগ বিধির এক তাৎপর্যময় নব প্রবর্তনার সূচনা করেন।

বিহারীলাল চক্রবর্তীর রচনাসমূহ :

বিহারীলালের প্রধান কাব্যগুলির নাম ‘বঙ্গসুন্দরী’ (১৮৭০), ‘প্রেম প্রবাহিণী’ (১৮৭০), ‘নিসর্গ সন্দর্শন’, ‘বন্ধুবিয়ােগ’ (১৮৭০), ‘সারদামঙ্গল’ (১৮৭৯) এবং ‘সাধের আসন’ (১৮৮৯)। এই কাব্যগ্রন্থগুলিতেই বাঙলা রােমান্টিক গীতিকবিতার যথার্থ সূচনা হয়েছিল। তাঁর কবিতাগুলি বিশ্লেষণ করলে রচনাভঙ্গির একটা বিবর্তনধারা অনুভব করা যায়। প্রথমদিকের কাব্যগ্রন্থগুলিতে কবি অনেক পরিমাণে বাস্তব অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করেছেন। প্রকৃতির দৃশ্যপট বা নারী-সৌন্দর্যের বর্ণনায় তিনি প্রত্যক্ষত বাস্তব অভিজ্ঞতানির্ভর। জাগতিক অভিজ্ঞতার প্রতিক্রিয়ায় কবিমানসের ভাবতরঙ্গুলি কীভাবে উদ্বেলিত হয়ে উঠে তার পরিচয় আছে বঙ্গসুন্দরী’ বা ‘বন্ধু বিয়ােগ’ কাব্যে। বাস্তব জীবনের আনন্দবেদনার স্মৃতিই এইসব কাব্যের উপকরণ।

পয়ার ছন্দে লেখা ‘বন্ধুবিয়ােগ’-এর চারটি সর্গের বিষয় কবির প্রথম পত্নী ও তিন বাল্যবন্ধুর স্মৃতি-বেদনা। রচনারীতি ঈশ্বর গুপ্তের অনুসারী। এই কাব্যে দেশের ও সাহিত্যের প্রতি কবির গভীর অনুরাগ প্রকাশিত হতে দেখা যায়। পাঁচ সর্গে ও পয়ারে রচিত প্রেম প্রবাহিণী তে কবিচিত্তের প্রথম জাগরণের চিত্র পাই। সংসারে আসল প্রেমের কোনও মূল্য নেই বুঝে কবি যখন হতাশাগ্রস্ত, তখন হঠাৎ তাঁর চিত্তে দৈবী আনন্দ দেখা দিল-

“আজি বিশ্বে আলাে কার কিরণ-নিকরে,

হৃদয়ে জ্বলে কার জয়ধ্বনি করে…

ক্রমে ক্রমে নিবিতেছে লােক-কোলাহল।

ললিত বাঁশরী তান উঠিছে কেবল 

মন যেন মজিতেছে অমৃত সাগরে,

দেহ যেন উড়িতেছে সমাবেগ ভরে।”

সাত সর্গে রচিত ‘নিসর্গসন্দর্শন’ (১৮৭০)-এর রচনাকাল ১৮৬৭ খ্রীষ্টাব্দের শেষ ভাগ। ১২৭৪ সালের কার্তিকের রাত্রিতে যে ভীষণ ঝড় বয়ে গিয়েছিল, তাই কাব্যটির শেষ তিন সর্গের বিষয়। প্রথম সর্গে পাই সংসারের প্রয়ােজনের সঙ্গে কবির স্বাধীনচিত্ততার সংঘর্ষে তার লক্ষ্যভ্রষ্ট বিক্ষুব্ধ অবস্থার চিন্তা। দ্বিতীয় সর্গে সমুদ্র দর্শন, সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে কবি রামায়ণ-কাহিনী স্মরণ করে দেশের পরাধীনতার বেদনা অনুভব করেছেন। তৃতীয় সর্গে একটি বীরাঙ্গনার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। চতুর্থ সর্গে নভােমণ্ডল সম্পর্কে কবি তার চিন্তা অনুভূতিকে প্রকাশ করেছেন। ‘বঙ্গসুন্দরী’ প্রথমে ছিল নয় সর্গ, দ্বিতীয় সংস্করণে (১৮৮০) তৃতীয় সর্গে ‘সুরবালা’ সংযােজনের ফলে হল দশ সর্গ। ‘সুরবালা’ আসলে স্বতন্ত্র কাব্য; প্রথম সর্গ ‘উপহারে’ পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে কবি অতৃপ্তি প্রকাশ করেছেন।

“সর্বদাই হু হু করে মন।

বিশ্ব যে মধুর মতন;

চারিদিকে ঝালাপালা,

উঃ কি জ্বলন্ত জ্বালা।

অগ্নিকুণ্ডে পতঙ্গ পতন।”

দ্বিতীয় সর্গে নারীবন্দনা। তৃতীয় সর্গে সুরবালা। চতুর্থ সর্গে চিরপরাধীনা গৃহকোণে বন্দী বাঙালি ঘরের নির্যাতিত বধুর মর্মবেদনার প্রকাশ। পরবর্তী সর্গগুলিতেও নারীর জীবন ও মানসের বিভিন্ন দিক প্রকাশিত হয়েছে।

সৌন্দর্য এবং প্রেম-প্রীতি বিহারীলালের কবি হৃদয়ের জাগরণ মন্ত্র। তার সৌন্দর্য-চেতনা ও প্রেমবােধ জাগ্রত হয়ে উঠে, এক সুতীব্র উৎকণ্ঠায় জাগতিক বন্ধনগুলি ছিন্ন করে যেন কোন এক শুদ্ধতর, পূর্ণতর উপলব্ধির জগতে উত্তীর্ণ হতে চায়। জগতের কোলাহল শ্রুতির অগােচর হয়ে আসে। সব বিচিত্রতা একটিমাত্র সুরের প্রবাহে মিশে যায়। প্রেম-প্রবাহিণীতে আভাসিত-

“মন যেন মজিতেছে অমৃত-সাগরে 

দেহ যেন উড়িতেছে সমাবেগ ভরে।”

এই সুরলােক উত্তরণের আগ্রহ, কবির পরিণত কাব্যগুলিতে ক্রমেই অধিক পরিমাণে পরিস্ফুট হয়েছে, তার এই কবিস্বভাবের যথার্থ পরিচয় পাওয়া যায় ‘সারদামঙ্গল’ কাব্য।

‘সারদামঙ্গলই বিহারীলালের সর্বশ্রেষ্ঠ রচনা। এই কাব্য সম্পর্কে কবি লিখেছেন, “মৈত্রী বিরহ, প্রীতি বিরহ, সরস্বতী বিরহ, যুগপৎ ত্রিবিধ বিরহে উন্মত্তবৎ হইয়া আমি সারদামঙ্গল সংগীত রচনা করি।” ‘সারদামঙ্গলে’ একটি অস্পষ্ট কাহিনীর রূপরেখা আছে। কিন্তু সেই কাহিনী বস্তুজগতের কোন ঘটনা অবলম্বনে গড়ে ওঠেনি। সারদামঙ্গলের জগৎ একান্তভাবেই কবির অন্তরস্থিত কল্পনার জগৎ। কাব্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবীরূপে তিনি সারদার মূর্তি রচনা করেছে। এই কাব্যলক্ষ্মীর রূপ-কল্পনায় কবির সৌন্দর্য-চেতনার সঙ্গে বিরহিত মৈত্রী-প্রীতি ‘র করুণা মিশ্রিত হয়েছে। কবিহৃদয়ের সৌন্দর্যবােধ এবং প্রেম-প্রীতি-ভালােবাসার নির্যাসে সারদাদেবীর তনু রচিত। কাব্যের সূচনায় বাল্মীকির কবিত্বলাভের প্রসঙ্গ- অবলম্বনে করুণাময়ী সৌন্দর্যলক্ষ্মী সারদার আবির্ভাব বর্ণিত হয়েছে, তারপর এই সারদার সঙ্গে কবির বিচিত্র লীলার বিবরণ বিভিন্ন সর্গে বর্ণনা করেছেন, “কখনও অভিমান, কখনও বিরহ, কখনও আনন্দ, কখনও বেদনা, কখনও ভৎসনা, কখনও স্তব। দেবী কবির প্রণয়িনীরূপে উদিত হইয়া বিচিত্র সুখ ও দুঃখের শতধারে সংগীত উচ্ছসিত করিয়া তুলিতেছেন। কবি কখনও তাহাকে পাইতেছেন কখনও কখনও তাহাকে হারাইতেছেন কখনও বা তাহার সংহার মূর্তি দেখিতেছেন। কখনও বা তিনি অভিমানিনী, কখনও বিষাদিনী, কখনও আনন্দময়ী” (রবীন্দ্রনাথ)।

বিশ্বচরাচরের সঙ্গে মানব-হৃদয়ের সম্পর্কের ফলে যে সব অনুভূতি উন্মীলিত হয়, কবি সারদাকে অবলম্বন করে এমন একটি জগৎ রচনা করেছেন যেখানে তাঁর সেইসব ব্যক্তিগত অনুভূতিপুঞ্জ শুদ্ধতরভাবে প্রকাশ করা যায়। কবির কল্পনার বিশ্ব এই কাব্যে যেভাবে প্রকাশ লাভ করেছে একমাত্র রবীন্দ্রনাথ ভিন্ন আর কারও কাব্যে অনুরূপ দৃষ্টান্ত পাই নাই। কবি-প্রেরণার এই ভঙ্গি বাঙলা কাব্যে সম্পূর্ণ নতুন; বিহারীলালের কবিতায় রূপ অপেক্ষা ভাবেরই প্রাধান্য। বিশ্বসৌন্দর্য তার কল্পনাদৃষ্টির সামনে কায়ার বন্ধনযুক্ত হয়েই দেখা দেয়। সেই নিরবয়ব শুদ্ধ সৌন্দর্যের প্রকাশ সারদায়। সারদার বন্দনায় কবি তাই বলেন-

“কায়াহীন মহা ছায়া, 

বিশ্ববিমােহিনী মায়া,

মেঘে শশী-ঢাকা রাকা রজনী-রূপিণী।

অসীম কানন তল

ব্যেপে আছে অবিরল,

উপরে উজলে ভানু, ভূতলে যামিনী।”

এই সৌন্দর্য বস্তুবিশ্বের সৌন্দর্য নয়। বস্তু থেকে তার কান্তিটুকু নিষ্কাশিত করে নিয়ে কবি তারই তনু নির্মাণ করেছেন। কবি-প্রেরণাকে বাইরে থেকে ভেতরে ফিরিয়ে কবি-ব্যক্তির অনুভবের জগৎটিকেই একান্তভাবে কাব্য-বিষয় করে তুলে বিহারীলাল বাঙলা সাহিত্যে যে অভিনব রসমুর্তি নির্মাণ করেন, বাঙলা গীতিকাব্যধারায় এটিই পরম প্রাপ্তিরূপে বিবেচিত হয়ে থাকে।

বিহারীলালের শেষ কাব্য সাধের আসন’-কে ‘সারদামঙ্গলে’র পরিশিষ্ট বলা যায়। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের পত্নী কাদম্বিনী দেবী বিহারীলালের ‘সারদামঙ্গলে’র ভক্ত পাঠিকা ছিলেন। তিনি কবিকে একটি পশমের আসন বুনে দিয়েছিলেন, তাতে ‘সারদামঙ্গলের এই কয় ছত্র তােলা ছিল-

“হে যােগেন্দ্র! যােগাসনে

ঢুলু ঢুলু দুনয়নে

বিভাের বিহুল মনে কাহারে ধেয়াও?”

ভক্ত পাঠিকা কবির কাছে এই সমস্যাপূরণের অনুরােধ জানিয়েছিলেন। কবি তার জন্য তিনটি স্তবক রচনা করে ক্ষান্ত ছিলেন। কাদম্বিনী দেবীর অকালমৃত্যুর পরে কবির সে কথা মনে পড়ে এবং সাধের আসন লিখে তিনি তার প্রতিজ্ঞা পূরণ করেন। কবি তার বিশুদ্ধ আনন্দ রসােপলব্ধিকে এই কাব্যে কিছুটা পরিমাণে বস্তুময় ও তত্ত্বরূপ দিতে চেষ্টা করেছেন। সারদামঙ্গলের তুলনায় রূপক এখানে অনেকটা পরিণত কিন্তু পরিস্ফুট কাহিনীতে গাথা পড়েনি।

বিহারীলালের কৃতিত্ব-অকৃতিত্ব-বিষয়ে আলােচনা প্রসঙ্গে অধ্যাপক অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তার কাব্যকবিতা সে যুগে এবং এ যুগে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি তাতে সন্দেহ নেই। এর কারণ, এই রােমান্টিক কবি মাঝে মাঝে এতটা আত্মনিষ্ঠ হয়ে পড়তেন যে তার ব্যক্তিগত উপলব্ধি সাধারণ পাঠকের কাছে দুর্বোধ্য লাগত। দ্বিতীয়ত, তিনি সচেতন শিল্পী ছিলেন না বলে, তার কবিতার কোন কোন স্থল অতিশয় ক্রুটিপূর্ণ অমার্জিত মনে হয়। কবি যেন নিজের অনুভূতিটুকু ব্যক্ত করেই নিশ্চিন্ত, কিন্তু অনুভূতিকে প্রকাশ করতে হলে তার যে একটা শিল্পকলা আছে, ছন্দ-অলঙ্কার ও শব্দের চেষ্টাকৃত রূপনির্মিতি প্রয়ােজন, এই ভাবুক কবি সে সম্বন্ধে আদৌ অবহিত ছিলেন না। এইজন্য আবেগের বিশুদ্ধি ও অভিনবত্ব সত্ত্বেও তার কাব্যকবিতা কোনদিন বহুপঠিত হয়নি, তার কাব্য থেকে দু’দশ পংক্তি স্মরণযােগ্য উদ্ধৃতি নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে তার রচনা শিল্পত্ব লাভ করেনি।”

তবু বাংলা গীতিকবিতার মন্ময় সুর আখ্যান বস্তু নিরপেক্ষভাবে বিহারীলালের কাব্যেই প্রথম শােনা গিয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ তাই বিহারীলালকে কবিগুরু বলে শুধু স্বীকার করেছিলেন তাই নয়, তিনি যথার্থভাবেই তাঁকে গীতিকবিতার কাননে ‘ভােরের পাখি’ বলে বাংলা কাব্যসাহিত্যের ইতিহাসে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও তাৎপর্যটি নির্দেশ করে দিয়েছেন।

Share

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading