বিদ্যাসাগরের দুটি সমাজসংস্কারমূলক গ্রন্থের নাম হল-‘বিধবাবিবাহ চলিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব’ (১৮৫৫) ও ‘বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক বিচার’ (১৮৭১, ১৮৭৩)।
মানবদরদি বিদ্যাসাগর সমাজের প্রতিও সচেতন ছিলেন। বাংলা গদ্যের বিকাশে তাঁকে যেমন নজর দিতে হয়েছিল, তেমনি সমাজের পঙ্কিল দূষিত স্রোতগুলি অপসারণে হাত দিতে হয়েছিল। ব্রাহ্মণ্যবাদ দ্বারা প্রচলিত বিধবার পুনরায় বিবাহ নিষিদ্ধ ও ব্রাহ্মণ দ্বারা বহুবিবাহ রোধের জন্য তিনি সচেষ্ট হয়েছিলেন। বাঙালি সমাজে যুবতি বিধবাদের অবস্থা দেখে তিনি বিচলিত হয়েছিলেন। বৈধব্য সংস্কারের যন্ত্রণা তাঁকে বারবার ভাবিয়েছিল। তিনি বাঙালির শাস্ত্রগ্রন্থ খুঁজে দেখিয়েছিলেন কোথাও বিধবার বিবাহ নিষিদ্ধ নেই। তেমনি জনমত সংগঠন করেছিলেন। তবে সেদিন রক্ষণশীল সমাজ তাঁর বিরুদ্ধে গিয়েছিল। তবুও যুক্তি প্রমাণের সাহায্যে তিনি এইসব প্রসঙ্গগুলি উত্থাপন করেছিলেন। ফলে ভাষা প্রাঞ্জল হয়নি। সংস্কৃত থেকে একাধিক উদ্ধৃতি তুলে আনার ফলে গ্রন্থধুটির জটিলতা হয়তো বৃদ্ধি পেয়েছে তবে সামাজিক সমস্যার সমাধান হয়েছিল।