বাংলা ছন্দে চরণ ও স্তবক

চরণ :

দীর্ঘ যতি বা পূর্ণ যতি ছাড়াও এই দুই যতির মধ্যবর্তী বিরতির জন্য মধ্যযতি ব্যবহৃত হয় । দুই দীর্ঘ যতির মধ্যবর্তী অংশকে চরণ বলে, আর মধ্য যতি দ্বারা চরণকে বিভক্ত করা হলে সেই অংশগুলোকে বলা হয় পদ। যেমন- তরুতলে আছি ∣ একেলা পড়িয়া ⊥ দলিত পত্র ∣ শয়নে ∣∣ তোমাতে আমাতে ∣ রত ছিনু যবে ⊥ কাননে কুসুম ∣ চয়নে∣∣ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) (এখানে ⊥ দ্বারা মধ্যযতি চিহ্নিত করা হয়েছে।) পূর্ণযতি দ্বারা আলাদা করা দুইটি অংশই চরণ; আর চরণের মধ্যযতি দিয়ে পৃথক করা অংশগুলো পদ। এরকম- যা আছে সব ∣ একেবারে ⊥ করবে অধি ∣ কার ∣∣ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

স্তবক :

দুই বা এর অধিক চরণ সুশৃঙ্খলভাবে একত্রিত হলে তাকে “স্তবক” বলে। ইংরেজীতে যাকে বলা হয় STANZA। এক একটি স্তবকে কবিতার মূল ভাব অন্তত আংশিক প্রকাশ পায়। সব কয়টি স্তবক মিলে কবিতার সমগ্র ভাবের প্রকাশ ঘটায়। সাধারণত কবিতার স্তবকগুলো পরষ্পর বিচ্ছিন্ন হয়। কবির ইচ্ছানুসারে দুই তিন চার প্রভৃতি যে কোন সংখ্যক চরণ নিয়ে স্তবক গঠিত হয়।

যেমন-

যত বড় হোক । ইন্দ্রধনু সে । সুদূর আকাশে । আঁকা ।।

আমি ভালবাসি । মোর ধরণীর । প্রজাপতিটির । পাখা ।।

বিদায় চাহিতে । নয়নে নয়ন । রাখি ।।

ছলছলি এলো । আঁখি ।।

সকলি ভুলিলে । নাকি ।।

Share

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading