বাংলা গদ্যের বিকাশে শ্রীরামপুর মিশনের অবদান আলোচনা করো।

উনিশ শতকে বাংলা গদ্যের বিকাশে শ্রীরামপুর মিশনের অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয়। ইংরেজরা খ্রিস্টানধর্ম প্রচারের জন্য মূলত গড়ে তুলেছিলেন শ্রীরামপুর মিশন। এ প্রসঙ্গে দুজন মিশনারির নাম স্মরণীয়। তাঁরা হলেন উইলিয়াম কেরী ও টমাস মার্শম্যান। এদেশে খ্রিস্টানধর্ম প্রচারের জন্য নানা গদ্যগ্রন্থ অনুবাদে তাঁরা নজর দিয়েছিলেন। ফলে বাংলা গদ্যের বিকাশ অনেকখানি তরান্বিত হয়েছিল।

মিশনারিদের মনে হয়েছিল রামায়ণ, মহাভারতের পাশাপাশি বাইবেল সহজ ভাষ্যায় অনুবাদ করে প্রচার করলে এদেশে খ্রিস্টান প্রচার সহজ হবে। কিন্তু ফল হয়েছিল বিপরীত। ধর্মপ্রচারে তাঁরা উদ্যত হলেও বাংলা গদ্যের বিকাশ খুব সহজ হয়েছিল। শ্রীরামপুর মিশন থেকে ধীরে ধীরে নানা গ্রন্থ অনুবাদ হতে শুরু করে। পাঠ্যপুস্তক হিসেবে রামায়ণ, মহাভারতের পাশাপাশি সংস্কৃত ব্যাকরণ ও ‘অমরকোষ’-এর টীকা প্রকাশিত হতে থাকে। এখান থেকেই ‘মঙ্গল সমাচার মতিউর চরিত’ প্রকাশ পায়। মার্শম্যান অনুবাদ করেন ‘ভারতবর্ষের ইতিহাস’ ও ‘বাঙ্গালার ইতিহাস’ গ্রন্থ।

ধর্মমতে তাঁরা যাই হোন না কেন, কেরী বিবিধ ভাষায় অভিজ্ঞ ছিলেন। ফলে অনুবাদেও সেই অভিজ্ঞতার প্রকাশ লক্ষ করা যাবে। তবে ভাষার ক্ষেত্রে জড়তা বর্তমান। কেননা আজকের ভাষার সঙ্গে সেদিনের ভাষার কোনো মিল খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। তবু বাংলা গদ্যের বিকাশে এঁদের অবদানকে অস্বীকার করা যায় না। বিভিন্ন পুরোনো গ্রন্থ অনুবাদ ও পুনঃপ্রকাশের ফলে বাঙালির বিশেষ লাভই হয়েছিল। তেমনি এই প্রতিষ্ঠানকে ঘিরেই |

Share

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: Content is protected !!

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading