সমস্যাজীর্ণ গ্রামীণ সমাজ এবং সাধারণ মধ্যবিত্ত ও বিত্তহীন মানুষের স্নেহ, প্রেম, সুখ-দুঃখ, আশা-নিরাশার কথা তার উপন্যাসে প্রকাশ করেছেন দরদি কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বিষয়বস্তুর ওপর নির্ভর করে শরৎচন্দ্রের উপন্যাসগুলিকে নিম্নলিখিত কয়েকটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়-
পারিবারিক উপন্যাস: শরৎচন্দ্রের এই পর্যায়ের উপন্যাসগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল ‘বিন্দুর ছেলে’, ‘মেজদিদি’, ‘নিষ্কৃতি’, ‘বৈকুণ্ঠের উইল’ ইত্যাদি। পারিবারিক দ্বন্দ্ব-জটিলতা, নারী মনস্তত্ত্ব, বিবিধ বৈষম্য এই উপন্যাগুলিতে স্থান পেয়েছে।
প্রেমমূলক উপন্যাস: ‘বড়দিদি’, ‘দেবদাস’, ‘পরিণীতা’, ‘দত্তা’, ‘দেনাপাওনা’ প্রভৃতি উপন্যাস হল শরৎচন্দ্রের কয়েকটি বিখ্যাত প্রেমমূলক উপন্যাস।
আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস: শরৎচন্দ্রের আত্মজীবনীমূলক উপন্যাসের মধ্যে এক এবং অদ্বিতীয় হল ‘শ্রীকান্ত’।
রাজনৈতিক উপন্যাস: ‘পথের দাবী’ হল শরৎচন্দ্রের একটি বিখ্যাত রাজনৈতিক উপন্যাস। একদা নিষিদ্ধ ঘােষিত হওয়া এই উপন্যাসটিতে সহিংস বিপ্লব শ্রদ্ধার সঙ্গে চিত্রিত হয়েছে।
মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস: শরৎচন্দ্রের তিনটি শ্রেষ্ঠ মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস হল ‘গৃহদাহ’, ‘চরিত্রহীন’ ও ‘শেষ প্রশ্ন’।
সামাজিক উপন্যাস: ‘পল্লীসমাজ’ শরৎচন্দ্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সামাজিক উপন্যাস। এই উপন্যাসে কথাশিল্পী গ্রাম্য সমাজপতিদের দলাদলি, হিংসা, স্বার্থপরতা, সম্পত্তির জন্য লােলুপতা ইত্যাদি তুলে ধরেছেন।
শরৎচন্দ্রের উপন্যাস শুধু বাঙালি পাঠক সমাজে নয়, অনুবাদের মাধ্যমে তা সমগ্র ভারতবর্ষে এবং ভারতবর্ষের বাইরেও পরিচিতি পেয়েছে।