বাংলা উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথের অবদান:
রবীন্দ্রনাথ বাংলা উপন্যাস রচনায় একটা নতুন প্রবাহ এনেছিলেন। বিষয়বস্তুর ওপর নির্ভর করে রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসগুলিকে নিম্নলিখিত কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।
ইতিহাস-নির্ভর উপন্যাস: রবীন্দ্রনাথের এই পর্যায়ের দুটি উপন্যাস হল ‘বউ ঠাকুরানির হাট’ (১৮৮৩) ও ‘রাজর্ষি’ (১৮৮৭)। ত্রিপুরা রাজবংশের এক বিশেষ সমস্যা নিয়ে রাজর্ষি আর বাংলাদেশের ধুপঘাটের রাজা প্রতাপাদিত্যের কাহিনি নিয়ে রচিত হয়েছে ‘বউ ঠাকুরানির হাট’ উপন্যাসটি।
সামাজিক উপন্যাস: ‘চোখের বালি’ (১৯০৩), ‘নৌকাডুবি’ (১৯০৬), ‘যােগাযােগ’ (১৯২৯) হল রবীন্দ্রনাথের তিনটি সামাজিক উপন্যাস। ‘চোখের বালি’ উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ মানুষের মনস্তত্ত্ব নিয়ে আলােচনা করেছেন। ‘যােগাযােগ’ উপন্যাসে দুটি মানুষ তথা পরিবারের বিপরীত রুচি, শিক্ষা দীক্ষা, ক্ষমতা ও অহংকারের স্বরূপ প্রকাশিত হয়েছে।
স্বদেশচেতনামূলক উপন্যাস: রবীন্দ্রনাথের স্বদেশচেতনা মূলক উপন্যাসগুলি হল- ‘গোরা’ (১৯১০), ‘ঘরে বাইরে’ (১৯১৬), ‘চার অধ্যায়’ (১৯৩৪)। মহাকাব্যধর্মী উপন্যাস ‘গােরা’য় গােরার ভারতজিজ্ঞাসা আসলে রবীন্দ্রনাথের স্বদেশসম্ধান। ‘ঘরে বাইরে’ উপন্যাসটি রচিত হয়েছে। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে। ‘চার অধ্যায়’ উপন্যাসে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের মতাদর্শ খুঁজে পাওয়া যায়।
রােমান্টিক উপন্যাস: ‘চতুরঙ্গ’ (১৯১৬), শেষের কবিতা (১৯২৯), ‘দুই বােন’ (১৯৩৩), ‘মালঞ’ (১৯৩৪) হল রবীন্দ্রনাথের লেখা কয়েকটি রােমান্টিক উপন্যাস। চতুরঙ্গ উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ অনেক রূপক বা সংকেতের ব্যবহার করেছেন।