তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে ? দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করো।

তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে ?

তৎপুরুষ সমাস হলো বাংলা ভাষায় এমন একটি সমাস যার মাধ্যমে দুটি বা ততোধিক পদ একত্রিত হয়ে একটি নতুন শব্দ বা পদ গঠন করে। এই সমাসে পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় এবং পরপদের অর্থ প্রধান হয়। তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদের বিভক্তির ওপর ভিত্তি করে নামকরণ করা হয়, যেমন— দ্বিতীয়া তৎপুরুষ, তৃতীয়া তৎপুরুষ, ইত্যাদি।

তৎপুরুষ সমাসের বৈশিষ্ট্য:

  1. পূর্বপদের বিভক্তি লোপ: সমাসের পূর্বপদের বিভক্তি লোপ পায় এবং দুটি পদ একত্রিত হয়।
  2. পরপদ প্রধান: পরপদের অর্থ বা গুণ প্রধান হয় এবং সেটাই মূল ভাবকে প্রকাশ করে।
  3. পূর্বপদে বিভিন্ন বিভক্তি থাকতে পারে: তৎপুরুষ সমাসে পূর্বপদে দ্বিতীয়া থেকে সপ্তমী পর্যন্ত বিভক্তি থাকতে পারে।

তৎপুরুষ সমাসের উদাহরণ:

  1. দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস:
    • বিপদকে আপন্ন: বিপদ + আপন্ন = বিপদাপন্ন
      • উদাহরণ: তিনি বর্তমানে অনেক বিপদাপন্ন অবস্থায় আছেন।
  2. তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস:
    • শক্তির সঙ্গে যুক্ত: শক্তি + যুক্ত = শক্তিযুক্ত
      • উদাহরণ: তিনি অত্যন্ত শক্তিযুক্ত একজন মানুষ।
  3. চতুর্থী তৎপুরুষ সমাস:
    • মাতার জন্য পূজিত: মাতা + পূজিত = মাতাপূজিত
      • উদাহরণ: সে মাতাপূজিত পূজার জন্য বিশেষ উৎসাহিত।
  4. পঞ্চমী তৎপুরুষ সমাস:
    • জীবনের জন্য সংগ্রাম: জীবন + সংগ্রাম = জীবনসংগ্রাম
      • উদাহরণ: জীবনসংগ্রাম করে মানুষ তার লক্ষ্য পূরণ করে।
  5. ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাস:
    • গ্রাম সম্পর্কিত: গ্রাম + সম্পর্কিত = গ্রাম্য
      • উদাহরণ: গ্রাম্য জীবন অনেক সহজ এবং সরল।
  6. সপ্তমী তৎপুরুষ সমাস:
    • অরণ্যে বন্যপ্রাণী: অরণ্য + বন্যপ্রাণী = অরণ্যবন্যপ্রাণী
      • উদাহরণ: অরণ্যবন্যপ্রাণীর সংখ্যা দিন দিন কমছে।

এই উদাহরণগুলোতে দেখা যাচ্ছে, তৎপুরুষ সমাসের মাধ্যমে দুইটি পদ একত্রিত হয়ে একটি নতুন পদ গঠন করেছে, যেখানে পরপদ প্রধান অর্থ প্রকাশ করছে।

আরো পড়ুন-

ধ্বনি পরিবর্তনের কারণগুলি উল্লেখ করো। এর প্রধান ধারাগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

টীকা লেখো: সমীভবন, অপিনিহিতি।

উপসর্গযোগে তিনটি শব্দ গঠন করো।

সমাস কাকে বলে ? সমাস কয় প্রকার ও কী কী ? সমাসের যে-কোনো দুটি প্রকারভেদের বিস্তৃত আলোচনা করো।

প্রত্যয় কাকে বলে ? বাংলা প্রত্যয় বিষয়ে বিশদে আলোচনা করো।

বর্ণ বিপর্যয় বা ধ্বনি বিপর্যয় কাকে বলে ? বিপর্যাস বা বর্ণ বিপর্যয় বা ধ্বনি বিপর্যয় কাকে বলে

উদাহরণসহ সংজ্ঞা দাও- স্বরসংগতি, সংকর শব্দ, জোড়কলম, বর্ণ বিপর্যয়।

ধ্বনি পরিবর্তনের কারণগুলি উল্লেখ করে এর প্রধান ধারাগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে ? দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করো।

বিভক্তি কাকে বলে ? শূন্য বিভক্তি বলতে কী বোঝ ? তির্যক বিভক্তি কাকে বলে

Share
Scroll to Top

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading