টীকা লেখোঃ ‘সারদামঙ্গল’

‘সারদামঙ্গল’ – বিহারীলাল চক্রবর্তী

প্রথম প্রকাশ – সন ১২৮৬

১২৭৭ সালে সারদামঙ্গলের রচনা আরম্ভ হইয়া অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়িয়া থাকে, ১২৮১ সালে “আর্যদর্শন” পত্রে তদবস্থাতেই প্রকাশিত হয়

[“সারদামঙ্গল” কবি বিহারীলাল চক্রবর্তীর শ্রেষ্ঠ কাব্য। এই কাব্যগ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ‘আর্যদর্শন’ পত্রিকায়। প্রকাশকাল ১২৮৬ বঙ্গাব্দ (২৯ শে ডিসেম্বর ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দ)। আখ্যানকাব্য হলেও এর আখ্যানবস্তু সামান্যই। মূলত গীতিকবিতাধর্মী কাব্য এটি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কাব্য সম্পর্কে লিখেছেন, “সূর্যাস্ত কালের সুবর্ণমণ্ডিত মেঘমালার মত সারদামঙ্গলের সোনার শ্লোকগুলি বিবিধরূপের আভাস দেয়। কিন্তু কোন রূপকে স্থায়ীভাবে ধারণ করিয়া রাখে না। অথচ সুদূর সৌন্দর্য স্বর্গ হইতে একটি অপূর্ণ পূরবী রাগিণী প্রবাহিত হইয়া অন্তরাত্মাকে ব্যাকুল করিয়া তুলিতে থাকে।” সমালোচক শিশিরকুমার দাশের মতে, “মহাকাব্যের পরাক্রমধারার পাশে সারদামঙ্গল গীতিকাব্যের আবির্ভাব এবং শেষপর্যন্ত গীতিকাব্যের কাছে মহাকাব্যের পরাজয়ের ইতিহাসে সারদামঙ্গল ঐতিহাসিক তাৎপর্যপূর্ণ কাব্য।]

উপহার

গীত

[রাগিণী ভৈরবী,– তাল আড়াঠেকা]

নয়ন-অমৃতরাশি প্রেয়সী আমার!

জীবন-জুড়ান ধন, হৃদি ফুলহার!

মধুর মূরতি তব

ভরিয়ে রয়েছে ভব,

সমুখে সে মুখ-শশী জাগে অনিবার!

কি জানি কি ঘুমঘোরে,

কি চোকে দেখেছি তোরে,

এ জনমে ভুলিতে রে পারিব না আর!

তবুও ভুলিতে হবে,

কি লয়ে পরাণ রবে,

কাঁদিয়ে চাঁদের পানে চাই বারেবার।

কুসুম-কানন মন

কেন রে বিজন বন,

এমন পূর্ণিমা-নিশি যেন অন্ধকার।

হে চন্দ্রমা, কার দুখে

কাঁদিছ বিষণ্ণ মুখে!

অয়ি দিগঙ্গনে কেন কর হাহাকার!

হয় তো হল না দেখা,

এ লেখাই শেষ লেখা,

অন্তিম কুসুমাঞ্জলি স্নেহ-উপহার,–

ধর ধর স্নেহ-উপহার!

Share

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading