জীবনানন্দ দাশের দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম ‘বনলতা সেন’ ও ‘মহাপৃথিবী’।
জীবনানন্দ দাশ প্রকৃতির কবি। প্রকৃতির নির্জনতার মধ্যেই তিনি বিরাজ করতে ভালোবাসতেন। বাংলাদেশের ফুল, পাখি, নদী তাঁকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করেছিল। বাংলাদেশের অতি পরিচিত তুচ্ছ তুচ্ছ গাছপালার পরিচয় তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন। ‘রূপসী বাংলা’ কাব্যে বাংলাস্ত্রেশের নিসর্গ চিত্রকে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা অনবদ্য। হেমন্ত, ফসলের মাঠ, মাঠ, শালিক, চিল, হিজল, বট বারবার তাঁর কাব্য পরিক্রমায় উপস্থিত হয়। প্রসঙ্গত, স্মরণ করা যাক ‘দুজন’ কবিতার কথা-“হেমন্ত আসিয়া গেছে; -চিলের সোনালি ডানা হয়েছে খয়েরি/ঘুঘুর পালক যেন ঝরে গেছে-শালিকের নেই আর দেরি/হলুদ কঠিন ঠ্যাং উঁচু করে ঘুমোবে সে শিশিরের জলে।” তিনি বাংলাদেশের নদীতীরে পড়ে থাকতে চেয়েছেন। তিনি বিশ্বসৌন্দর্য দেখতে চান না। তিনি বাংলাদেশের সৌন্দর্যের মধ্যেই বিশ্বকে খুঁজে নিতে চান। ধানসিড়ি নদীর তীরে থেকে যেতে চান। আবার ‘হায় চিল’ কবিতায় এক বেদনার জগতে ভেসে যান-“হায় চিল, সোনালি ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে/তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে উড়ে ধানসিঁড়ি নদীটির পাশে!”