উদাহরণসহ সংজ্ঞা দাও- স্বরসংগতি, সংকর শব্দ, জোড়কলম, বর্ণ বিপর্যয়।

Table of Contents

স্বরসঙ্গতি কাকে বলে? স্বরসঙ্গতির উদাহরণ দাও?

১. স্বরসংগতি (Vowel Harmony):

সংজ্ঞা: স্বরসংগতি হলো একটি ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া যেখানে একটি শব্দের মধ্যে সমস্ত স্বরবর্ণ এক ধরনের বা একই গুণাবলী প্রদর্শন করে। অর্থাৎ, একটি শব্দের সমস্ত স্বরবর্ণ বা ধ্বনি একসঙ্গে একটি নির্দিষ্ট উচ্চারণে সম্মিলিত হয়। এটি সাধারণত পরপর বা কাছাকাছি অবস্থানরত ধ্বনির মধ্যে ঘটে এবং ধ্বনি উচ্চারণ সহজ করার জন্য ঘটে।

উদাহরণ:

  • বাংলায়: “কাজা” (কাজ + আ) যেখানে “কাজ” এর ‘আ’ এবং “আ” এর ‘আ’ মিলে ‘আ’ ধ্বনি হয়েছে।
  • ইংরেজিতে: “harmony” শব্দের মধ্যে দুটি ‘a’ এবং ‘o’ এক ধরনের উচ্চারণে মিলিত হয়।

২. সংকর শব্দ (Hybrid Word):

সংজ্ঞা: সংকর শব্দ হলো এমন একটি শব্দ যা দুটি বা ততোধিক বিভিন্ন ভাষার শব্দাংশের মিলনে গঠিত হয়। এ ধরনের শব্দগুলোতে ভিন্ন ভাষার শব্দ বা শব্দাংশ একত্রিত হয়ে একটি নতুন অর্থবোধক শব্দ তৈরি করে।

উদাহরণ:

  • “বায়োডাইভার্সিটি” (বায়ো + ডাইভার্সিটি): গ্রিক ভাষার “বায়ো” (জীবন) এবং ল্যাটিন ভাষার “ডাইভার্সিটি” (বৈচিত্র্য) থেকে গঠিত।
  • “সিনেমাটোগ্রাফি” (সিনেমা + গ্রাফি): গ্রিক ভাষার “সিনেমা” (চলচ্চিত্র) এবং “গ্রাফি” (লেখা বা চিত্রিত করা) থেকে গঠিত।

৩. জোড়কলম (Blending):

সংজ্ঞা: জোড়কলম হলো দুটি ভিন্ন শব্দের অংশবিশেষ নিয়ে একটি নতুন শব্দ গঠন করার প্রক্রিয়া। এতে দুটি শব্দের অংশ একত্রিত হয়ে একটি নতুন শব্দ তৈরি করে, যা সাধারণত সংক্ষিপ্ত এবং সহজবোধ্য হয়।

উদাহরণ:

  • “ব্রাঞ্চ” (ব্রেকফাস্ট + লাঞ্চ): ‘ব্রেকফাস্ট’ (সকালের খাবার) এবং ‘লাঞ্চ’ (দুপুরের খাবার) শব্দ দুটি থেকে গঠিত একটি শব্দ।
  • “স্মগ” (স্মোক + ফগ): ‘স্মোক’ (ধোঁয়া) এবং ‘ফগ’ (কুয়াশা) শব্দ দুটি থেকে গঠিত একটি শব্দ।

৪. বর্ণ বিপর্যয় (Metathesis):

সংজ্ঞা: বর্ণ বিপর্যয় হলো একটি ধ্বনিতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া যেখানে একটি শব্দের মধ্যে ধ্বনির ক্রম পরিবর্তিত হয়। এটি এমন একটি পরিবর্তন যেখানে শব্দের মধ্যে থাকা ধ্বনির স্থান পরিবর্তন হয়ে যায়।

উদাহরণ:

  • বাংলায়: “মণীষা” (মনি + ঋষা) → “মণীষা”
  • ইংরেজিতে: “ask” → “aks” (ধ্বনির স্থান পরিবর্তন)

স্বরসংগতি উদাহরণ:

উদাহরণ:

  • বাংলায়: “আবাগা” (আ + বা + গা) এখানে ‘আ’ এবং ‘আ’ দুইটি স্বরবর্ণ একই গুণাবলী ধারণ করছে।
  • তুর্কিতে: তুর্কি ভাষায় স্বরসংগতি অত্যন্ত সাধারণ একটি নিয়ম। উদাহরণস্বরূপ, ‘kapı’ (দরজা) এবং ‘kapılar’ (দরজাগুলি), যেখানে সব ধ্বনি পেছনের এবং সামনের স্বরবর্ণ দ্বারা সমানভাবে উচ্চারণ হয়।

স্বরসংগতি একটি ভাষার ধ্বনিতাত্ত্বিক গঠনকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলে এবং এটি উচ্চারণে সুবিধা প্রদান করে।

আরো পড়ুন-

ধ্বনি পরিবর্তনের কারণগুলি উল্লেখ করো। এর প্রধান ধারাগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

টীকা লেখো: সমীভবন, অপিনিহিতি।

উপসর্গযোগে তিনটি শব্দ গঠন করো।

সমাস কাকে বলে ? সমাস কয় প্রকার ও কী কী ? সমাসের যে-কোনো দুটি প্রকারভেদের বিস্তৃত আলোচনা করো।

প্রত্যয় কাকে বলে ? বাংলা প্রত্যয় বিষয়ে বিশদে আলোচনা করো।

বর্ণ বিপর্যয় বা ধ্বনি বিপর্যয় কাকে বলে ? বিপর্যাস বা বর্ণ বিপর্যয় বা ধ্বনি বিপর্যয় কাকে বলে

উদাহরণসহ সংজ্ঞা দাও- স্বরসংগতি, সংকর শব্দ, জোড়কলম, বর্ণ বিপর্যয়।

ধ্বনি পরিবর্তনের কারণগুলি উল্লেখ করে এর প্রধান ধারাগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

তৎপুরুষ সমাস কাকে বলে ? দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করো।

বিভক্তি কাকে বলে ? শূন্য বিভক্তি বলতে কী বোঝ ? তির্যক বিভক্তি কাকে বলে

Share

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading