‘চার অধ্যায়’ উপন্যাসের প্রেক্ষাপটে রাজনীতি থাকলেও এলা-অতীনের প্রেমই উপন্যাসটির প্রধানতম আকর্ষণ-
রবীন্দ্রনাথের পরবর্তী উপন্যাস ‘চার অধ্যায়’ (১৯৩৪) ‘ঘরে বাইরে’-র মত রাজনৈতিক আন্দোলনের আলোচনার উপর প্রতিষ্ঠিত। ইহাতে স্বদেশী আন্দোলনের অঙ্গীভূত একটি বিশেষ প্রচেষ্টা-বিপ্লববাদ-আলোচিত হইয়াছে। ঘর ও বাহিরের যে চিরন্তন বিরোধ তাহারই এক অধ্যায় ইহার আলোচ্য সমস্যা। বাহিরের তীব্র মোহ ও সর্বনাশী প্রলয় যে ঘরের স্নিগ্ধ ও স্থিরজ্যোতি প্রেম-প্রদীপকে নিবাইয়া দিবার চেষ্টা করে, এই শোচনীয় সত্যই রবীন্দ্রনাথের কবিকল্পনাকে বার বার অভিভূত করিয়াছে। ‘ঘরে বাইরে’-র উপন্যাসে বাহিরের বিপ্লব সুপ্রতিষ্ঠিত প্রেমকে সিংহাসনচ্যুত করিয়াছে। ‘চার অধ্যায়’-এ ইহার বিরুদ্ধ শক্তি প্রেমকে তাহার ন্যায্য অধিকার হইতে বঞ্চিত করিয়া তাহার সিংহাসনস্থাপনেই বাধা দিয়াছে।
বিপ্লববাদের বিরুদ্ধে উপন্যাসের নায়ক অতীনের অভিযোগ ত্রিবিধ-তাহার সনাতন নীতিজ্ঞান, আত্মস্বাতন্ত্র্য ও প্রেম এই তিনেরই ন্যায্য অধিকার ইহার পীড়নে সংকুচিত হইয়াছে। বিপ্লববাদ তাহার ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র্যকে, তাহার প্রকৃতির স্বাধীন প্রসারকে রুদ্ধ ও প্রতিহত করিয়াছে, তাহার মধ্যে কবিপ্রতিভার যে অনন্যসাধারণ বৈশিষ্ট্য ছিল তাহাকে নির্বিচার নিয়মানুবর্তিতার চক্রপেষণে উন্মুলিত করিতে চাহিয়াছে। তাই অতীনের অনুযোগের মধ্যে আত্মহত্যাকারীর একটা নিষ্ফল ক্ষোভ ও তীব্র আত্মগ্লানির সুর বার বার ধ্বনিত হইয়া উঠিয়াছে। গত ইউরোপীয় মহাযুদ্ধে অনেক তরুণ কবি নিজ স্ফুটনোন্মুখ কবি-প্রতিভার অকালমৃত্যুর সম্ভাবনায় যুদ্ধের পাশবিক নৃশংসতার বিরুদ্ধে যে তীব্র আক্ষেপোক্তি উচ্চারণ করিয়াছে, অতীনের মুখে যেন তাহারই প্রতিধ্বনি শোনা যায়। সৈনিকের খাকি পোশাকের তলে যে সূক্ষ্ম অনুভূতিশীল, বৈচিত্র্যপিয়াসী, কবি-হৃদয়ের জীবন্ত সমাধি হয় সেই অপমৃত্যুর কাহিনীই যুদ্ধের ক্ষতির হিসাবে সর্বাপেক্ষা মোটা অঙ্ক। দলের কথার প্রতিধ্বনি কখনই কবি-হৃদয়ের নিজস্ব বাণীর সহিত মিলিয়া যাইতে পারে না; এই বেনামী কথার পুনরাবৃত্তি শেষ পর্যন্ত কবির নিজ ভাষাকে মুক করিয়া দেয়। বিপ্লবপন্থী অতীন নিজ নৈসর্গিক কবিপ্রতিভার অপমান করিয়া আত্মবিকাশ্রে সর্বপ্রধান পথকে রুদ্ধ করিয়া দিয়াছে এবং এই ব্যর্থতার বেদনা তাহার অনুযোগকে এত অসহনীয় করিয়া তুলিয়াছে।
তারপর নীতিজ্ঞানের দিক্ দিয়া বিপ্লববাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে, তাহা সার্বভৌমিক। বিপ্লববাদের নৈতিক ভিত্তি হইতেছে মনুষ্যত্বের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। কিন্তু প্রকৃত কার্যক্ষেত্রে যদি এই মনুষ্যত্ব ও বিবেকবুদ্ধিরই বলিদান হয়, তবে ইহার নৈতিক আশ্রয় যে একেবারে ভূমিসাৎ হইরা যায় তাহা বলাই বাহুল্য। প্রকাশ্য যুদ্ধ-ঘোষণার মধ্যে একটা বীরত্বের গৌরব আছে; কিন্তু বিপ্লববাদের মুখোশ-পরা, গুপ্ত নৈশ অভিযানের মধ্যে যে অপরিসীম হীনতা ও নৃশংসতা আছে তাহা একেবারে পৌরুষ-সংস্পর্শ-বর্জিত। প্রবলের সঙ্গে যুদ্ধে যেখানে দুর্বলের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী, সেখানে কেবলমাত্র অবিচলিত মনুষ্যত্বের উচ্চ মঞ্চের উপর দাঁড়াইয়াই দুর্বল প্রবলের সহিত সমক্ষতার স্পর্ধা করিতে পারে। এই উচ্চ মঞ্চ হইতে একবার অবতরণ করিলে রসাতলের পঙ্কনিমগ্ন হইয়া যাওয়া অনিবার্য। দেশপ্রীতির মোহে ধর্ম ভুলিলে একটা ক্ষণস্থায়ী প্রয়োজনের জন্য সনাতনকে বিসর্জন দেওয়া হয় ও দেশের স্থায়ী কল্যাণের ভিত্তি অপসারিত হয়। বিপ্লববাদের প্রতি এই তীব্র বিরাগ সত্ত্বেও অতীন যে তাহাদের সংস্পর্শ হইতে নিজকে বিচ্যুত করে নাই, তাহা কেবলমাত্র সঙ্গীদের প্রতি সহানুভূতির জন্য; যে বিপথে সে পা বাড়াইয়াছে, কেবল মনুষ্যত্বের খাতিরেই তাহাকে শেষ পর্যন্ত সেই পথের চরম দুর্দশার স্বাদ গ্রহণ করিতে হইবে-প্রত্যাবর্তনে বিপস্ হইতে অব্যাহতির আশা আছে বলিয়াই প্রলোভনবৎ তাহাকে বর্জন করিতে হইবে।
বিপ্লববাদের নৈতিক সমর্থনের পক্ষে যাহা বলা যায় তাহা বিপ্লবপন্থীদের নেতা ইন্দ্রনাথের মুখে দেওয়া হইয়াছে। ইন্দ্রনাথের প্রধান অনুপ্রেরণা আসিয়াছে শক্তিপরীক্ষার দিক্ হইতে। তাঁহার ফললাভের মোহ নাই, কোন মিথ্যা আশা তাঁহার অকুণ্ঠিত সত্যদৃষ্টকে মলিন করিয়া দেয় নাই। পরাজয় অনিবার্য জানিয়াও তিনি তাঁহার দলভুক্ত যোদ্ধাদের অসাধ্যসাধনের দুঃসাহসে অনুপ্রাণিত করিয়াছেন ও কেবলমাত্র বীর্যপরীক্ষার অবসর দিবার জন্যই নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলিয়া দিয়াছেন। এ দিকে যেমন দেশের প্রতি তাঁহার কোন মোহ নাই, সেই- রূপ বৈদেশিক শাসনের প্রতি তাঁহার কোন তীব্র বিরাগ নাই; ডাক্তারের যেমন রোগের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নাই, সেইরূপ তিনি বৈজ্ঞানিকের অপ্রমত্ত চিত্ত লইয়া পরাধীনতার মূলোচ্ছেদ করিতে চাহিয়াছেন। অর্থাৎ বিপ্লববাদকে তিনি সম্পূর্ণরূপে নীতিজ্ঞানের সীমা- বহির্ভূত করিয়া উহাকে গৌরীশঙ্কর-অভিযান বা সমুদ্র-সন্তরণের মত দুঃসাহসিক কাজের পর্যায়- ভুক্ত করিয়াছেন। ইহা আর যাহা হউক, বিপ্লববাদের নৈতিক বিচার-হিসাবে মোটেই পর্যাপ্ত নহে।
বৈপ্লবিক কর্ম-প্রচেষ্টা-নিয়ন্ত্রণে তিনি যে নীতির অনুসরণ করিয়াছেন তাহা নিতান্ত দুর্বোধ্য। এলা ও কানাই গুপ্তের কথোপকথনে তাঁহার উদ্দেশ্ন ও অনুসৃত প্রণালীর যে ঈষৎ আভাস পাওয়া যায় তাহাতে বিষয়টি মোটেই পরিষ্কার হয় না। প্রথমতঃ, প্রেম ও বিবাহ সম্বন্ধে তাঁহার মতামত একটু অদ্ভুত ও পরস্পর-বিরোধী। উমা সুকুমারকে ভালবাসে; কিন্তু সুকুমার কাজের লোক বলিয়া প্রণয়ের আবেশ তাহার পক্ষে নিষিদ্ধ। আর উমার ব্যর্থ প্রেম যাহাতে চারিদিকের আবেষ্টনে একটা উৎপাতের সৃষ্টি না করে, সেইজন্ম ভোগীলালের অভিমুখে তাহার জন্য কৃত্রিম প্রণালী কাটিয়া দেওয়া হইয়াছে, কেন না, “জজাল ফেলার সবচেয়ে ভাল ঝুড়ি বিবাহ।” পক্ষান্তরে ভালোবাসাতে তাঁহার কোন আপত্তি নাই, যদি তাহা বিবাহ-পিঞ্জরে চিরবন্ধ না হয়। যে পর্যন্ত ব্রতভঙ্গ না হয়, সে পর্যন্ত তিনি এলাকে ভালোবাসিতে অবাধ ছাড়পত্র দিয়াছেন, অথচ আবার সেই মুহূর্তে আদেশ করিতেছেন যে, এলা তাহার প্রণয়াস্পদের প্রাণ লইবার জন্য প্রস্তুত থাকিবে। বিপ্লবপন্থীদের চণ্ডীমণ্ডপে এলা যোহাবেশের দেবী-প্রতিমা-তাহার হাতের রক্তচন্দনের ফোঁটা তাহাদের সমস্ত দেহ-মনকে রাঙ্গাইয়া মৃত্যুবিভীষিকার উপর প্রেমের দীপ্ত অরুণিমা ফলাইয়া তোলে; তাহারা মরণের ভ্রূকুটিকে প্রেমের ইঙ্গিত মনে করিয়া সর্বনাশের পথে ছুটিয়া চলে। যেখানে প্রেমের সহিত দেশহিতব্রতের সংঘর্ষ অনিবার্য, সেখানে তরুণ-তরুণীর সহযোগিতা কেন নিষিদ্ধ নহে, ইহার উত্তরে তিনি বলিয়াছেন যে, তাঁহার অগ্নিপ্রলয়ের জন্ম এমন লোক চাই যাহার ভিতরে আগুন আছে, অথচ নিজে সে আগুনে ভস্ম না হয় এমন আত্মসংযম ও দৃঢ়সংকল্প আছে। মোট কথা, এই সমস্ত সূক্ষ্ম বিধি-নিয়ে। ও সীমা-নির্দেশের বেড়াজালে যে আবেষ্টনটি রচিত হইয়াছে তাহাকে বুদ্ধি দিয়া অনুভব করা হয়ত চাইতে পারে, কিন্তু উপল্লাসের বাস্তব পটভূমি-হিসাবে গ্রহণ করা মোটেই সহজ নহে।
কিন্তু অতীনের সর্বাপেক্ষা গভীর বেদনাবোধ তাহার ব্যর্থ-প্রেমবিষয়ক। তাহার বিপ্লব- বাদের মধ্যে ঝাঁপাইয়া পড়ার প্রধান প্রেরণা আসিয়াছে প্রেমের দিক্ হইতে। মতানুবর্তিতা প্রেমের আনুগত্য-প্রকাশের একটা খুব সাধারণ উপায়-এলার সহিত সহজ পথে মিলনে অলঙ্ঘনীয় বাধা আছে বলিয়াই, অতীন’ এলার নির্দিষ্ট কর্মধারায় প্রেমের সার্থকতার একটা জটিল, কৃত্রিম পথ সৃষ্টি করিয়া লইয়াছে। এই গোপন সুড়ঙ্গপথে চলিতে গিয়া তাহার মনে যে অনপনেয় কলঙ্কস্পর্শ হইয়াছে তাহাই তাহার প্রেমের যাত্রাপথে একটা দুরতিক্রম্য অন্ত- রায় হইয়া উঠিয়াছে। তাহার এই প্রতিহত প্রেমের ক্ষুদ্ধ অভিযোগের মধ্যে একটা অসংধরণীয় আবেগ সঞ্চারিত হইয়াছে। এলার সহিত প্রথম সাক্ষাতের দিনের যে ছবিটি তাহার মনে অবিস্মরণীয় উজ্জ্বল বর্ণে মুদ্রিত আছে তাহাই একদিকে তাহার ব্যর্থতার ব্যথাকে উদ্বেলিত। করিতেছে ও অপরদিকে দেশপ্রীতির মধ্যে যে অন্তঃসারশূর ভাববিলাস আছে তাহার প্রতি তাহার দৃষ্টিকে অসামান্যরূপ তীক্ষ্ণ ও প্রতিবাদকে আলাময় করিয়া তুলিতেছে। রবীন্দ্রনাথের অনেকগুলি উপন্যাসেই দেখা যায় যে, তিনি বারবার দেশপ্রীতির সহিত তুলনায় প্রেমের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপন্ন করিতে চাহিয়াছেন। গোরা ও বিমলা উভয়েই জীবনের অভিজ্ঞতা তাহাদিগকে প্রেমের স্নিগ্ধ, অনাবিল সম্পূর্ণতার দিকে প্রত্যাবর্তন করাইয়াছে, প্রেমকে অঙ্গীকার করিয়া দেশসেবার ভারগ্রহণ যে একটা গণ্ডিত, অসম্পূর্ণ আত্মবিকাশ এই সত্য তাহারা স্বীকার করিতে বাধ্য হইয়াছে। অতীন ও এলার প্রতিজ্ঞা-প্রত্যাহার সেই সহ-প্রতিপন্ন সত্যের দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করে।
অবশ্য এই তুলনামূলক বিচারে প্রেমের প্রতি পক্ষপাত-প্রদর্শনে রবীন্দ্রনাথের বিশেষ স্বাভাবিক ও যুক্তিযুক্ত হেতু আছে। পরাধীন দেশে দেশপ্রীতির পথ যে কণ্টকাকীর্ণ তাহাই শুধু নয়-ইহা সুস্থ ও সম্পূর্ণ আত্মবিকাশেরও পরিপন্থী। যে মনোভাবে ইহার জন্ম তাহার মধ্যে দ্বেষ, হিংসা ও বিরাগের প্রচুর উপাদান বর্তমান। ইহার মধ্যে কঠোর আত্মরমন, কুন্ডুসাধনের নির্দয় আত্মপীড়ন আছে-প্রেমের অপার আনন্দ ও স্বতোবিকশিত মাধুর্যের অবসর নাই। সুতরাং লেখক যে পরিমাণে কবি, যে পরিমাণে পরিপূর্ণ বিকাশের পক্ষপাতী, সেই পরিমাণে দেশানুরাগের নীরস, কঠোর সাধনা ও সংকীর্ণ পরিধির মধ্যে আত্মসংকোচনের প্রতি সহাহুভূতিহীন। বাস্তবিক দেশপ্রীতির প্রসন্ন, স্নিগ্ধহাভোজ্জ্বল মুখকান্তির সহিত আমাদের পরিচয় নাই-যে মুখ আমাদের চোখে পড়ে তাহা ভ্রুকুটি-কুটিল, হিংস্রভাবাপন্ন দৃঢ়প্রতিজ্ঞায় কুঞ্চিতাধর। সুতরাং তাহা প্রেমের সহিত প্রতিযোগিতার স্পবী করিতে পারিবে কেন?
এইবার উপন্যাসাচর কেন্দ্রগত দুর্বলতার বিষয়ে আলোচনা করা যাইতে পারে। উপন্যাসের আসল নায়ক-নায়িকা অতীন বা এলা নহে, বিপ্লববাদের যে প্রতিবেশ উপন্যাসের সমস্ত পাত্র- পাত্রীর মনোভাবকে বিশেষ আকার ও গতিবেগ দিয়াছে তাহাই প্রকৃতপক্ষে উক্ত সম্মানের দাবি করিতে পারে। অতীন ও এলা এই প্রতিবেশের দুরন্ত-বেগোৎক্ষিপ্ত দুইটি ধূলিকণা মাত্র। তাহাদের মনোভাবের যে কিছু বৈশিষ্ট্য, তাহাদের আবেগের যে কিছু তীব্রতা, সমস্তই প্রতিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়ার ফল। সুতরাং প্রতিবেশপ্রভাব ভাল করিয়া বিশ্লেষণ না করিলে নায়ক-নায়িকার মনোরহস্তে আমাদের কাছে অর্ধস্ফুট থাকিয়া যাইবে। লেখক আভাসে, ইঙ্গিতে প্রতিবেশের যে ক্ষীর প্রতিচ্ছায়া ফুটাইয়াছেন তাহা মনস্তত্ত্ববিশ্লেষণের সহায়তাকয়ে যথেষ্ট বলিয়া মনে হয় না। লিখিত ক্ষুত্র চারি অধ্যায়ের পিছনে যে বহুসংখ্যক অলিখিত অধ্যায় আত্মগোপন করিয়া যাছে, তাহাদের অভাবে উপল্লাসের ঘটনাধিগ্লাস যেন খণ্ডিত ও ভারকেন্দ্রচ্যুত বলিয়া মনে হয়। গোয়ার দেশপ্রীতির উৎকট সর্বব্যাপিতা মনুভব না করিলে সুচরিতার প্রেমের নিকট তাহার আত্মসমর্পণের সম্পূর্ণ সার্থকতা উপলব্ধি করা খায় না। এখানেও তেমনি অতীনের আত্মঘাতী বিদ্রোহ ও এলার ব্যাকুল সহগুশোচন। বুঝিতে হইলে যে শক্তি তাহাদিগকে নিজ দ্বন্দ্বেন্ত নাগপাশে বাঁধিয়াছিল তাহার আহুমানিক নহে, প্রতাগ পরিচয় চাই। এই পরিচয়ের অভাবই উপন্যাসের প্রধান ত্রুটি।