অবরোহ যুক্তি:- যে প্রকার যুক্তিতে এক বা একাধিক আশ্রয় বাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় এবং সিদ্ধান্তটি কখনোই আশ্রয় বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয় না, তাকে অবরোহ যুক্তি বলে।
উদাহরণ– সকল মানুষ হয় মরণশীল।
– রাম হয় মানুষ।
: . রাম হয় মরণশীল।
আরোহ যুক্তি:- যে প্রকার যুক্তিতে বিশেষ বিশেষ গুটি গতক দৃষ্টান্তকে পর্যবেক্ষণ করে, প্রকৃতির একরূপতা নীতি কে সামলে রেখে সিদ্ধান্তে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে আরোহ যুক্তি বলে।
উদাহরণ– রাম মানুষ এবং মরণশীল।
– শ্যাম মানুষ ও মরণশীল।
– হরি মানুষ ও মরণশীল।
: . সব মানুষ হয় মরণশীল।
আরোহ ও অবরোহ যুক্তির মধ্যে পার্থক্য:
১) অবরোহ যুক্তি তে এক বা একাধিক আশ্রয় বাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি নিঃসৃত হয়।
কিন্তু, আরোহ যুক্তি তে সর্বদা একাধিক আশ্রয় বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয়।
২) অবরোহ যুক্তিতে সিদ্ধান্ত আশ্রয় বাক্য থেকে ব্যাপকতর হতে পারে না।
অপরদিকে আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি আশ্রয় বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয়।
৩) অবরোহ যুক্তিতে সিদ্ধান্ত আশ্রয় বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়।
পক্ষান্তরে আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্ত আশ্রয় বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না।
৪) অবরোহ যুক্তি তে আশ্রয় বাক্য ও সিদ্ধান্তে প্রসক্তি সম্বন্ধ থাকে।
কিন্তু, আরোহ যুক্তি তে থাকে না।
৫) অবরোহ যুক্তি তে শুধুই আকারগত সততার উপর লক্ষ্য রাখা হয়।
অপরদিকে আরোহ যুক্তিতে আকারগত ও বস্তুগত সত্যতার উপর লক্ষ্য রাখা হয়। যদিও আরোহ যুক্তিতে বস্তুগত সত্যতার উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
৬) অবরোহ যুক্তি যেহেতু আকারগত সত্যতার উপর প্রতিষ্ঠিত তাই যুক্তিটি বৈধ হয়।
কিন্তু, আরোহ যুক্তি তে যেহেতু বস্তুগত সত্যতার উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়, তাই যুক্তিটি বৈধ হয় না। সর্বদা সম্ভাব্য হয়।
৭) অবরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি সামান্য বচন আবার বিশেষ বচন হতে পারে।
কিন্তু, আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি সর্বদাই সামান্য বচন হয়।
৮) অবরোহ যুক্তি তে কোনো লাফ বা ঝুঁকি থাকে না।
অপরদিকে আরোহ যুক্তির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো আরোহমূলক লাফ, ঝুঁকি।
৯) বৈধতার কোনো মাত্রা না থাকায় অবরোহ যুক্তিকে কখনই কম বৈধ বা বেশি বৈধ বলা যায় না।
কিন্তু, সম্ভাব্যতার মাত্রা থাকায় আরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তটি কম সম্ভাব্য বা অধিক সম্ভাব্য বলা যায়।